সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সেপ্টেম্বর, ২০১৭ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

কেমন আছে শহর বর্ধমান ?......( আপাতত শেষ পর্ব)

কেমন আছে শহর বর্ধমান ? ......( আপাতত শেষ পর্ব)  কিভাবে লুপ্তোদ্ধার সম্ভব? না, এই এলোমেলোভাবে গড়ে ওঠা শহরের লুপ্তোদ্ধার সম্ভব নয়। প্রথমেই এই কথাটা বলে রাখা ভাল। কিছু মেরামত করা সম্ভব। এখনই যদি সদর্থক উদ্যোগ নেওয়া যায় তাহলে এই শহরের শ্রী ও স্বাস্থ কিছু পরিমাণে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে নানাজনের সাথে আলোচনা করে আমার কিছু কথা মনে হয়েছে। এখানে সেই কথাগুলি সংক্ষেপে বলতে চাই। অনেকদিন ধরে নানাসূত্র থেকে আমি কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। আমার অসাবধানতার কারণে আমার ল্যাপটপটি নিশিকুটুম্ব নিয়ে গেছে। আমার সংগৃহীত যাবতীয় তথ্যও সেইসঙ্গে চলে গেছে। ফলে তথ্যসহ কথা বলা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। আমি গত দুতিনদিন ধরে বর্ধমান মিউনিসিপ্যালিটী ও বর্ধমান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ওয়েবসাইট খুঁজলাম । দরকারী তথ্য পেলাম না। এই দুই সংস্থা আমাদের এই প্রিয় শহরের উন্নতির জন্য কি কি পরিকল্পনা রচনা করেছেন জানতে পারলে সুবিধা হোত। লক্ষ্য করে দেখবেন আমি আমার প্রতিবেদন ও ব্যাখ্যায় রাজনৈতিক দোষারোপের মধ্যে নিজেকে জড়াই নি। আমি বুঝেছি এই দোষ আমাদের সকলের। ব্যক্তি মানুষের লোভ ও স্বার্থচিন্তা সমানভাবে দায়ী এই শহরের এই বর্তমান অবস্থ...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ?......( নয় )

কেমন আছে শহর বর্ধমান ? ......( নয় ) এ শহর কি জতুগৃহ হবে? আমি যখন ‘বর্ধমান সমাচার’ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলাম তখন থেকেই মাথায় প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে। এই শহরের সারা অবয়ব জুড়ে “সুপার মার্কেট” তৈরি হতে শুরু করেছে উনিশশো নব্বইয়ের দশক থেকেই। সুপার মার্কেট বলতে যে ঝা চকচকে একটা ছবি মানসচক্ষে ভেসে ওঠে এগুলি তার অত্যন্ত ‘দরিদ্র আত্মীয়’ সংস্করণ । ভেতরে ঢুকে এক রাস্তা থেকে আর এক রাস্তায় ঢুকতে গেলে অবশ্যই ধাক্কা খাবেন উল্টোমুখে আসা অন্য কারো সাথে। নেই আরো কতকিছু। সব থেকে বড় কথা এইসব মার্কেটে আগুণ লাগলে দমকল ঢুকতে পারবে না। যদিবা কোন কৌশলে জলের পাইপ নিয়ে যাওয়া যায় জল কোথায়? আশেপাশের পুকুরগুলি ‘পুকুর চুরি’ হয়ে গেছে। এমন কি বাঁকার পাড়েও যদি বসতি এলাকায় আগুণ লাগে কোনদিন জল পাওয়া যাবে না। সারা শহরটা স্থান বিশেষে খান্ডব বন ও জতুগৃহের রূপ নিয়েছে। # অনেক কথা বলার চেস্টা করলাম। আরো অনেক বেশি কথা বলা হোল না। স্মৃতি নির্ভর লেখার এই এক মুস্কিল। লেখা প্রকাশিত হবার পর মনে হয়,’ আরে এই খানটায় এই তথ্য বাদ গেছে; এখানটা অন্যভাবে লেখা যেত ।‘ না, এখন ভেবে লাভ নেই। দুয়েকটা কথা ব্যক্তিগত কৈফিয়ত হিসাবে বলার...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ?...(আট)

কেমন আছে শহর বর্ধমান ? ...(আট) শহরের হৃদয়ের তত্বতালাশ দুদিক দিয়ে এই শহরের ‘হৃদয়ের’ খোঁজ নেওয়া যেতে পারে। যদি কেউ বাইরে থেকে অতিথি হিসাবে আসেন তাঁকে বলি রেল ইস্টিশান থেকে বেরিয়ে ডানদিক না গিয়ে বা সোজা না গিয়ে জিটি রোড বরাবর কলকাতার দিকে দক্ষিণ্মুখো হাঁটতে থাকুন। ঘোড়ার গাড়ি এখন রূপকথার বইএর পাতায় তাই একটা টোটো ধরুন। নেমে পড়ুুন বিজয় তোরণের সামনে। ইচ্ছে হলে কার্জন গেটও বলতে পারেন। হ্যাঁ , ঠিকই ধরেছেন ১৯০৫এ লর্ড কার্জন বর্ধমানে এসেছিলেন। তাঁর সম্মানেই এই তোরণ ইন্ডিয়া গেটের আদলে নির্মিত । এসে তো ছিলেন আরো অনেকে। নেতাজী সুভাষ , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তারও আগে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি অবশ্য কলকাতা থেকে বজরায় এসেছিলেন। সদরঘাটে নেমেছিলেন। দামোদর তখন নাব্য ছিল। মহতাব চাঁদ তখন মহারাজ। রাজবাড়ির ভিতরে আদি ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিদ্যাসাগরের আসার কথা শোনা যায় । নানা আখ্যানে লেখাও আছে এ সংবাদ। পারকার রোডের একটি বাড়িতে তিনি উঠতেন বিশ্রাম নিয়ে স্বাস্থ উদ্ধারের জন্য। আশ্চর্য না? এই শহরে কেউ আসতেন স্বাস্থ উদ্ধারের জন্য? তাও বিদ্যাসাগরের মত ব্যক্তিত্ব? না, এঁদের স্মরণে কোনো তোরণ নির্ম...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ......(সাত)

কেমন আছে শহর বর্ধমান ......(সাত) বাঁকার সাথে পায়ে পায়ে এবার আমরা একটু অন্যপথে ঘুরতে বেরোব শহরটা। আমাদের অভিমানিনী বাঁকার সঙ্গে একটু আন্তরিক চেনাজানা করা দরকার। চলুন শহরের পশ্চিম দিকে একবার ঘুরে আসি। একটা সময় ছিল যখন একমাত্র বাঁকাই এই শহরের পানীয় জলের যোগান দিত। বেলকাশ ও ফেরীঘাটের উত্তর সীমানা দিয়ে বাঁকা বয়ে এসে রথতলা সাইফনের কাছে আরো ডানদিকে বাঁক নিয়ে রথতলাকে দক্ষিণে রেখে শহরে ঢুকেছে। এখানে বাঁকা এখনো ছোটো নদী। রথতলা ঢোকার আগে আর একটু ডানদিকে বাঁকার একটা ধারা বয়ে গেছে। মনে হয় এটা মানুষের কীর্তি । এখানেই জলকল। আরো উত্তরে বীরুটিকরি গ্রাম। এইখানে জল শোধন করে পাম্পের সাহায্যে শহরে পাঠানো হোত পানীয় জল। মূল এলাকার নাম লাকুরডি। এখন এই লাকুরডি ও জলকল-বীরুটিকুরি গ্রামের মাঝ বরাবর দুর্গাপুর হাইওয়ে বা বাইপাস চলে গেছে। আমরা রথতলা ও মোহন্ত স্থলের কাছে বাঁকাকে ছেড়ে লাকুরডির পথ ধরে টিকরহাটে ঢুকবো। লাকুরডি অঞ্চলের পূর্ব সীমানায় একটা আদ্যিকালের পুরোনো গাছ ও তার নীচে একটা মন্দির আছে। ঠিক তার পূর্ব সীমানা দিয়ে একটা ছোটো কাঁদর ঝিরিঝিরি বয়ে চলেছে দক্ষিণে বাঁকার দিকে। গোদার পশিম পারের মাঠের অতিরিক্ত...

কেমন আছে বর্ধমান শহর...( ছয় )

কেমন আছে বর্ধমান শহর ... ( ছয় ) কেমন ছিল জলনিকাশি ব্যবস্থা? ভেবেছিলাম লেখার শেষে ব্যক্তিগত কিছু মতামত দেব- কেউ নিক বা না নিক। কুন্তলা গোলমাল করে দিল। কুন্তলা লাহিড়ী দত্ত। কুন্তলা এই সময়ে ANU অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াচ্ছে ও গবেষণায় ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করছে। ও এখন একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বুদ্ধিজীবী ও লেখিকা এবং বিভিন্ন মানবিক সমস্যা বিষয়ক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত। ও যে যে বিষয়ে অভিজ্ঞ ও জ্ঞানী সে সে বিষয়ে আমি একেবারেই অজ্ঞ। অল্প যে কয়েকজন ‘বুদ্ধীজীবী’কে আমি সইতে পারি কুন্তলা তাদের মধ্যে আমার অন্যতম প্রিয় একজন মানুষ। মূলত ও ভূগোলের মানুষ। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিষয়ে দীর্ঘকাল অধ্যাপনা করেছে। বর্তমানে ওর বৌদ্ধিক বিচরণের ক্ষেত্র অনেক বেশি বিস্তৃত। দামোদর বেসিন নিয়ে কুন্তলা দীর্ঘদিন অনুসন্ধান, ফিল্ড স্টাডি ও গবেষণা করেছে। বর্ধমান নগর উন্নয়ন পরিকল্পনায় কুন্তলা নানাভাবে সাহায্য করতে পারতো। এই শহরটা কুন্তলারও বড় হয়ে ওঠার ধাত্রীভূমি। বাবা স্বনামধন্য অধ্যাপক হরশংকর ভট্টাচার্য। কিন্তু কুন্তলার সাহায্য নেবার প্রয়োজন কেউ অনুভবই করেন নি। ওর প্রিয় ছাত্রী তথা ব...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ?...( পাঁচ )

কেমন আছে শহর বর্ধমান ? . ..( পাঁচ ) কেন তখন এই শহরে জল জমতো না? সকলেই জানেন এই শহরে চারটি বড় দিঘী/সরোবর বা ‘সায়র’ খনন করিয়েছিলেন ‘রাজ’ পরিবারের লোকেরা। দীঘিগুলির নামের মধ্যেই এই পরিচয় বিধৃত হয়ে আছে। সবথেকে বড়টির নাম কৃষ্ণসায়র আর সব থেকে ছোটো দীঘিটির নাম কমল সায়র। এটি কেশবগঞ্জ চটীর কাছে অবস্থিত। এই দীঘির পূবপাড়ে দাঁড়িয়ে আছে ইঞ্জীনীয়ারিং কলেজটি। রাজ কলেজের সামনে শ্যামসায়র এবং আরো পূব দিকে অবস্থিত রাণীসায়র। এ ছাড়াও এই শহরে অসংখ্য ছোট বড় পুকুর ও জলাশয় ছিল। ছিল বলছি তার কারণ এদের মধ্যে অনেকগুলি বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। এ কথায় আসার আগে কিছু অন্য কথা সেরে নি। বর্ধমান রাজবাড়ী ঠিক কতখানি যায়গা জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে অনেকেই হয়তো তার অনুমান করতে পারবেন না। একটু বর্ণনা করি। শহরের মাঝখান থেকে যে ঘড়ি দেখা যায় সেটা রাজবাড়ির পূর্ব দিক। এই ঘড়ির চৌকোনা গম্বুজটাকে ডান হাতে রেখে সোনাপট্টীর মধ্য দিয়ে শ্যামবাজারের সরু রাস্তা ঘরে চলুন হাঁটতে থাকি। রাস্তার দুপাশে সোনারূপোর গহনা প্রস্তুতকারক শিল্পীদের দোকান এখনো আছে। এই রাস্তার মাঝামাঝি এসে ডানদিকে লক্ষী নারায়ণ জীঊ মন্দির। ভিতরে ঢুকলে মনে হবে বুঝি অষ্টাদশ শতাব্দীর...

কেমন আছে শহর বর্ধমান? (চার)

কেমন আছে শহর বর্ধমান? ......(চার) [কেমন ছিল জলনিকাশি ব্যবস্থা সামন্ততান্ত্রিক আমলে?] প্রথমে সবুজের কথা যে টুকু আরো বলার ছিল বলে নিই। সদরঘাটের পূবদিক বরাবর হাটশিমুল গ্রাম পর্যন্ত হেঁটে চলুন( সাইকেল আরো ভাল)। এখানে এসে গ্রামের মধ্য দিয়ে ক্যানেলের ব্রীজ পেরিয়ে গোপালপুরে ঢুকে পড়ুন। ইরিগেশান বাংলোর ঠিক পাশে জিটি রোডে পৌঁছে যাবেন। এক্টুখানি পূবে হেঁটে গেলেই উল্লাস। এই শহরের বিত্তবানদের তৃতীয় ঠিকানা( দ্বিতীয়টি কলকাতায় বা রাজারহাট/নিউ টাউনে) এবং মধ্যবিত্তের স্বপ্নের বাড়ি। পঞ্চায়েত এলাকা। ধানজমি দখল করে। পিছনে রেললাইন। পশ্চিমে শিয়াল ডাঙ্গার শেষ প্রান্তের শুরুর বিন্দু। খানিকটা পঞ্চায়েত এলাকা, খানিক মিউনিসিপ্যাল এলাকা। চোখ জুড়ানো সবুজে ছাওয়া ছিল। এখন যেদিকে চোখ যায় কংক্রিটের জঙ্গল। সবুজের আভাস মাত্র চোখে পড়ে। এসব বামফ্রন্টের ‘উন্নয়নের রাজনীতির’ ফসল। তৃনমূলী জমানায় সেই ‘উন্নয়নের’ রথ-ই চলছে বিপুল উদ্যম ও গতিতে। উদয়পল্লী কাঞ্চননগর, রথতলা, ইদিলপুর, তেজগঞ্জ দামোদর বা ডিভিসি ক্যানেলের গা ঘেঁসে অবস্থিত। বর্তমানে জাতীয় সড়ক বা ন্যাশনাল হাইওয়ে একটা বিভাজন রেখা টেনে দিয়েছে। এই অঞ্চলগুলি এই হাইওয়ের দক্...

কেমন আছে বর্ধমান শহর?...(তিন)

কেমন আছে বর্ধমান শহর? ...(তিন) কোথায় গেল সেইসব গাছগুলি? ।।৫ জুন আজ।। আজ যারা আমার বয়সী বা বয়সে আমার অগ্রজ তারা স্বচক্ষে দেখেছেন এই জরাজীর্ণ শহর একসময় কতখানি সবুজ ছিল। শুধুমাত্র উত্তরফটক থেকে গোলাপবাগ পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে, কৃষ্ণ সায়রের চারপাশে, মোহন বাগান, তারাবাগ, বাবুরবাগ থেকে কেশবগঞ্জ চটী পর্যন্ত কয়েক হাজার পুরোনো গাছ ছিল। গোলাপ বাগের ভিতরে অসংখ্য গাছ ছিল। শাল, শিশু, মেহগিনির পাশাপাশি আম, বেল, তেঁতুল , পেয়ারা প্রভৃতি ফলের গাছ ছিল। ছিল বকুল, গাব, অশোক, পলাশ, কদম্ব, চালত া, হিজল জারুল- এবং আরো নানা প্রজাতির গাছ। দেবদারু এরকম একটি গাছ। পেয়ারা গাছের বাগান ছিল রমনার মাঠে। এসব গাছ আপনাআপনি গজায় নি। একটা সুনির্দিষ্ট ভাবনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী এইসব গাছ লাগানো হয়েছিল। শুলিপুকুরের উত্তর পাড়ে বিশাল আমবাগান ছিল। বড় বাজারের মুখ থেকে বোরহাট, টিকরহাট, এবং রাজবাড়ির সামনে থেকে গোলাপবাগ ও জিটি রোড পর্যন্ত মোরাম বিছানো লালমাটির পথ দিয়ে ঘোড়ার গাড়ি সওয়ারি নিয়ে যেত একশো আট শিব মন্দির দর্শন করাতে। উদয় চাঁদ মহিলা কলেজের পাশে বড় চৌবাচ্চা এই সেদিন পর্যন্ত ছিল ঘোড়াদের জল খাবার জন্য। ভেরীখানায় ছিল আ...

শহর বর্ধমান কেমন আছে?।।(দুই)

শহর বর্ধমান কেমন আছে? ।।(দুই) নদী পাশ ফিরে শোয়। না, এটা কোন গল্পের বা কবিতার লাইন নয়। নদী বিশেষজ্ঞদের কাছে জিজ্ঞেস করলেই তারা প্রাঞ্জল করে বুঝিয়ে দেবেন। আধুনিক প্রযুক্তির সয়ায়তায় দুরন্ত দামোদরকে আমরা বশে এনেছি। এখন এই নদের শুকনো বুকে কান পেতে শুনলে অনুভব করা যায় বুকের গভীরে কতখানি দুঃখ পুষে রেখেছে সে। বর্ধমান জনপদকে সুরক্ষিত রাখার জন্য উত্তর প্রান্ত বরাবর উঁচু মাটির বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে নদীর বুকে কায়েম হয়েছে বালি মাফিয়াদের অবাধ লুটপাট। এর কী বিষময় পরণতি হতে পারে তা আমরা কল্পনাও করতে পারছি না। রাজনীতি আবর্তিত হচ্ছে পাঁচ বছরের হিসাবনিকাশের অঙ্ক কষে। স্থায়ী সমাধানের কথা কেউ ভাবতে রাজী নন। ইতিমধ্যেই দুএকবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল বণ্যার জল বাঁধ ফাটিয়ে শহরে প্রায় ঢুকে পড়ার পথ খুঁজে পেল বুঝি! নদীকে বশ করা অত সহজ নয়। আগামী পঞ্চাশ বছরে কী হবে আমরা কেউ জানি না। লোকমুখে প্রবাদ আছেঃ নদীর তীরে বাস ভাবনা বারোমাস।। দামোদর যেদিন পাশ ফিরে শুতে চাইবে সেদিন এই শহরকে বাঁচানো যাবে না। এমন হতে পারে আমরা সেদিন থাকব না। এই অভিশাপ রেখে যাব পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। বাঁকা নদ, নদী না নালা সে বিতর্ক স্মি...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ?

কেমন আছে শহর বর্ধমান ? এখন মিনিট পনেরো এক নাগাড়ে বৃষ্টি হলে বর্ধমান শহরটা জাদুবলে ভেনিস হয়ে যায়। এমনকি বিজয় তোরণের এ পাশেও জল জমে। বাকি শহরের কথা বলার দরকার নেই। যারা শহরের ওইসব অঞ্চলে বসবাস করেন তারা জানেন। আমি এরকম পঞ্চাশটা অঞ্চলের নাম বলতে পারি। এক নাগাড়ে ৬৫ বছর এই শহরের স্থায়ী বাসিন্দা আমি। হাতের তালুর মত শহরটা চিনি। বছর চল্লিশ আগে ‘উদয় অভিযান’ পত্রিকায় একটা প্রতিবেদন লিখেছিলাম। প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল বর্ধমানের নগর পরিকল্পনা ও পয়ঃপ্রণালী সংস্কার ও জলনিকাশি প্রকল্প। লিখেছিলাম এই এলোমেলো ভাবে গড়ে ওঠা শহরটাকে যদি এখনই নজর না দেওয়া হয় তাহলে একদিন শহরটা জতুগৃহ হবে এবং সামান্য বৃষ্টিতে জল জমবে এমনকি বিজয় তোরণের কাছে বিসি রোডের উপর। উদ্যোগী ব্যবসায়ীরা রবারের নৌকা কিনে রাখতে পারেন। বর্ধমান নর্দমার জলে ভেনিস হবে। অনেকদিন ধরে আমাকে এজন্য নানারকম ঠাট্টা বিদ্রূপ শুনতে হয়েছে। পরে যখন সত্যিই জল জমতে আরম্ভ করল তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে। ২০০০ সালে লায়ন্স ক্লাবে একটা সেমিনার হয়- একবিংশ শতকের বর্ধমানের নগর পরিকল্পনা নিয়ে। সেই সেমিনারে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ততকালীন উপাচার্য ডঃ মোহিত চট্টোপাধ্যায় ও আমি...
15 June 2017 : এমন নিশ্চিন্ত শান্তির ঘুম সাত তারা হোটেলের বিছানাতেও লভ্য নয়

বহু যুগ -এর ওপাড় হতে

বহু যুগ -এর ওপাড় হতে আমার বালক বয়সের একমাত্র নমুনা তখন আমি ক্লাস টেন

কোন অতীতে!

4 July 2017 : মিনিট পনেরো আগে পাশের দোকানে গিয়েছিলাম। রাস্তা এখন ফাঁকাই বলা যায়। দরজা বন্ধ করতে যাব খুব নীচু স্বরে অনেক পুরোনো দিনের একটা গানের কলি কানে এল,' আমি চেয়ে চেয়ে দেখি সারাদিন/ বুঝি ওই চোখে সাগরের নীল'... কি যে ভাল লাগা হোল! তাকিয়ে দেখি রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে একজন মাঝ বয়সী ভদ্রলোক আপন মনে নীচু গলায় এই গানটা গাইতে গাইতে হেঁটে চলেছেন। সুরের জ্ঞান আমার মতই। একা একা গাওয়া এবং শোনার মত সুর। চেনা যায় গান বলে। প্যান্ট শার্ট পরা ভদ্রলোক বাজারের ব্যগ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।মনের মধ্যে সুরের মূর্ছনা নিয়ে। কিছুক্ষণ দরজায় দাঁড়িয়ে রইলাম। মন চলে গেল কোন অতীতে! তখন স্কুলে পড়ি। সেই সময়ের গান। হেমন্ত না শ্যামল? পিন্টু নয়, মানবেব্দ্র বা সতীনাথ নয়। ওদের দুজনের মধ্যেই একজন কেউ হবে। ঠিক মনে পড়ছে না। তখন , মানে ১৯৫৮/৫৯ সালে বড়বাজারে 'ক্যালকাটা আইস ডিপো' এবং উত্তর ফটকে ঘটকদের বাড়িতে ফিলিপ্সের রেডিও ছিল। ছাদে এন্টেনা লাগিয়ে চালাতে হোত। আমরা স্কুল পালিয়ে বড়বাজারে গান শুনতে যেতাম । রাস্তায় দাঁড়িয়ে শুনতাম। তখন ঘোড়ার গাড়ি চলত। অল্প কিছু রিক্সা চলত। মোটর গাড়ি বা মোটর সাইকেল দেখাই যেত না। নিশ্...

স্বপ্ন-পূরান বা ইনফ্যাচুয়েশন

স্বপ্ন-পূরান বা ইনফ্যাচুয়েশন -ঈশ্বর পাটনী -এই মেয়ে , তন্ময় হয়ে কি ভাবছ? আমার কথা? মেয়েটি আপন মনে পড়ছিল। সামনে সেমিস্টার আছে। টিপটিপ করে সারা সন্ধ্যে বৃষ্টি পড়ছে। বিকেল থেকে সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত হওয়া পর্যন্ত একই যায়গায় বসে আছে সে। বৃষ্টি বাড়ছে কমছে। মনের মধ্যে একটা গান অনেকক্ষণ আসাযাওয়া করছে। ‘আজি ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে...’। গলা ছেড়ে গাইতে পারছে না। পড়ায় মন দিতে হচ্ছে তাই। কিন্তু এই জলদগম্ভীর কন্ঠস্বর কার? সে তো দরজা বন্ধ করেই পড়ছে! সেই মা যখন খেতে ডাকবে তখন সে দরজা খুলবে। বন্ধ ঘরে তো কারো ঢোকার কথা নয়। তাহলে কি সে ভুল শুনেছে? -কি ভাবছ? এবার সত্যিই চমকে উঠলো পৃথা । ঠিক কানের কাছেই কেউ যেনও কথা বলছে তার সঙ্গে। আর গলাটাও খুব চেনা। কিন্তু এই বৃষ্টির রাতে তার ঘরে কোন মানুষের আসার কথাই নয়। আর একটা ব্যাপার। তিনি স্বর্গে গেছেন তার জন্মের আগে। তাহলে কিভাবে তিনি আসতে পারেন এই সময়ে তার পড়ার ঘরে? পৃথা টেবিল ছেড়ে উঠে পড়ল। ঘরের টিউব লাইট জ্বালিয়ে দিল। না কেউ কোত্থাও নেই। একেই কি বিভ্রম বলে? পড়ার টেনশন থেকে এমন হতে পারে। হয়তো তার পড়তে ভাল লাগছে না। মনে মনে এস্কেপ করতে চাইছে। আর এস্কেপ করার তার দু...

মেহবুব পাখিওয়ালা।

মেহবুব পাখিওয়ালা। হঠাত টিয়াপাখির ডাক শুনে বাইরে গিয়ে দেখি এই মেহবুবকে। একটা বাঁশিতে টিয়ার মত অবিকল ডাকছে। কাছে ডাকলাম । দুটো খেলনা টিয়া কিনলাম। বললাম ফটো নেব। এক মুখ হেসে রাজি হোল। কি সুন্দর হাসি। ঘরে বউ বাচ্চা আছে। সকাল বিকেল টিয়া পাখির ডাক নকল করে বাঁশিতে বাজায়।স্বপ্ন দেখে । তেমন কোন দুঃখ বোধ নেই। কারণ মেহবুব তত্ব জানে না। দুঃখ কেনে না।