সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

সত্যম বদ প্রিয়ম বদঃ অপ্রিয়ম সত্যম মা বদ

সত্যম বদ প্রিয়ম বদঃ অপ্রিয়ম সত্যম মা বদ ছোটো বয়সে সংস্কৃত ক্লাশে অনুবাদ করেছিলামঃ সত্যম বদ প্রিয়ম বদঃ অপ্রিয়ম সত্যম মা বদ। মনের মধ্যে খটকা এখনো লেগে আছে। সত্য সবসময় 'প্রিয়' হবে এমন কোনো মানে নেই। লোকের মন রাখতে গিয়ে মিথ্যে বা অর্ধ সত্যের চাষ করে যেতে হবে। তারপর আমরা একটা সুস্থ সমাজ চাইব!  মাঝে মাঝেই দেখি আমি হয়তো কোনো বন্ধুর পোষ্টে কিছু মন্তব্য করেছি যা সত্য কিন্তু তার মনঃপূত নয়। কিছুক্ষণ পর দেখি আমার মন্তব্য ডিলিট করে দিয়েছে। আমি হয়তো আর সেখানে কিছু মন্তব্য করব না বা তাকে আনফ্রেন্ড করব না ( তার স্তরে আমি কেন নামবো ?) কিন্ত সত্য কি ডিলিট করা যাবে? একটা তর্ক প্রায় শুনি- আমার সত্য বনা্ম তোমার সত্য। আমার হাসি পায়। সত্যের স্বরূপ তুমি- আমি -স্বাপেক্ষ নয়।
সাম্প্রতিক পোস্টগুলি

জাড্য

জাড্য বিজ্ঞানের ছাত্র নই। এজন্য অনেকে আমাকে কম-বুদ্ধিমান ভাবেন বরাবর। তার উপর কেজি ইস্কুলের প্রধান শিক্ষকতা করেছি- মানে একেবারেই পাতে দেবার যোগ্য নই। এ নিয়ে খুব একটা সমস্যা হয় না। বুদ্ধি ধার পাওয়া যায় , ফিরিতেও পাওয়া যায়। বুঝি না বললেই একসঙ্গে অনেকে বলে ওঠে -"আরে এটা এত সোজা, বোঝ না? এসো বুঝিয়ে দিচ্ছি।" এমনই একটি বিষয় -জাড্য। পাগলা। ক্লাশ টেন পর্যন্ত একটা জাবদা বিজ্ঞানের পড়তে হোত। কোর বিজ্ঞান বলা হত। ৭৫ মত পেয়েছিলাম। ওটা আমাদের HS Marksheet-এ লেখা থাকত কোনের দিকে। চিত্ত বাবু বিজ্ঞান পড়াতেন। গতি জাড্য ও স্থিতি জাড্য বুঝিয়েছিলেন। চিত্ত বাবু কবিতা লিখতেন, গল্প উপন্যাস লিখতেন, অসাধারণ বাটিকের কাজ করতেন। আমাকে খুব ভাল বাসতেন । তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সম্পর্ক ছিল স্নেহ প্রীতি ও শ্রদ্ধার। গতি জাড্য একরকম বুঝতাম। এতদিনে স্থিতিজাড্য ব্যাপারটা পরিস্কার হোল। পুজো শেষ। এবার কাজে মন ফেরাতে হবে। কিন্তু মনের স্থিতিজাড্য পেয়েছে। কাজ করতে চাইছে না। শুধু অলস শুয়ে থাকতে চাইছে। মন ঘুরে বেড়াচ্ছে এরকম কোন যায়গায় কাজের কথা ভাবতেই রাজী নয়। কি করি?

পদার্থ -অ-পদার্থ

পদার্থ -অ-পদার্থ আমার মা স্কুলে পাঠশালায় যান নি। বিদ্যাসাগর মশাইয়ের প্রথম ভাগ পড়তে পারতেন। দ্বিতীয় ভাগ অনেক কষ্টে বানান করে পড়ার চেষ্টা করতেন। আমি পেছনে লাগতাম। একবার তিনি আমাদের এক দাদাকে একটি পোষ্ট কার্ড লিখে একজনকে পোষ্ট করতে দিয়েছিলেন। ঠিকানা ছিল না। সেটি আমি হস্তগত করে পাঠোদ্ধার করার চেষ্টা করি। লেখা ছিল,’ বাবা কখন (খোকন), কেমন আছ।...... কিছু পরে ,’ সন্ধ্যা -টুকুনের নেই”। কি নেই?  মা, সন্ধ্যা টুকুনের কি নেই গো? সন্ধ্যা আমার এখনকার বড় বোন আর টুকুন মেজ। অনেক গবেষণা করে জানা গিয়েছিল যে মা লিখতে চেয়েছিলেন,’ সন্ধ্যা টুকুনের প্যান্ট’ নেই।“ মায়ের অপিরিসীম বিশ্বাস ছিল খোকনদার উপর। ভাবতেন খোকন ঠিক বুঝে নেবে। বলা বাহুল্য তখন আমাদের একটা লড়াই চলছে টিঁকে থাকার। শুধু প্যান্ট নয় প্রায় কিছুই নেই। কিন্তু আমাদের ঘর পূর্ণ ছিল। মা ছিল। দশভূজার থেকেও অনেক অনেক বড় কিছু। এই মা আমার প্রথম বন্ধু ছিল না। ঠাকুদ্দা ছিল আমার এক নম্বর বন্ধু। কিন্তু তারপর থেকে কিভাবে মা হয়ে উঠলেন সবকিছু। সেকথা থাক। এই মা ছাড়া সবাই , বিশেষ করে আমার স্কুলের শিক্ষকরা মনে করতেন আমি একটি অপদার্থ। বড্ড প্রশ্ন করি! দুষ্টুমি...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ?......( আপাতত শেষ পর্ব)

কেমন আছে শহর বর্ধমান ? ......( আপাতত শেষ পর্ব)  কিভাবে লুপ্তোদ্ধার সম্ভব? না, এই এলোমেলোভাবে গড়ে ওঠা শহরের লুপ্তোদ্ধার সম্ভব নয়। প্রথমেই এই কথাটা বলে রাখা ভাল। কিছু মেরামত করা সম্ভব। এখনই যদি সদর্থক উদ্যোগ নেওয়া যায় তাহলে এই শহরের শ্রী ও স্বাস্থ কিছু পরিমাণে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে নানাজনের সাথে আলোচনা করে আমার কিছু কথা মনে হয়েছে। এখানে সেই কথাগুলি সংক্ষেপে বলতে চাই। অনেকদিন ধরে নানাসূত্র থেকে আমি কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। আমার অসাবধানতার কারণে আমার ল্যাপটপটি নিশিকুটুম্ব নিয়ে গেছে। আমার সংগৃহীত যাবতীয় তথ্যও সেইসঙ্গে চলে গেছে। ফলে তথ্যসহ কথা বলা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। আমি গত দুতিনদিন ধরে বর্ধমান মিউনিসিপ্যালিটী ও বর্ধমান ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ওয়েবসাইট খুঁজলাম । দরকারী তথ্য পেলাম না। এই দুই সংস্থা আমাদের এই প্রিয় শহরের উন্নতির জন্য কি কি পরিকল্পনা রচনা করেছেন জানতে পারলে সুবিধা হোত। লক্ষ্য করে দেখবেন আমি আমার প্রতিবেদন ও ব্যাখ্যায় রাজনৈতিক দোষারোপের মধ্যে নিজেকে জড়াই নি। আমি বুঝেছি এই দোষ আমাদের সকলের। ব্যক্তি মানুষের লোভ ও স্বার্থচিন্তা সমানভাবে দায়ী এই শহরের এই বর্তমান অবস্থ...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ?......( নয় )

কেমন আছে শহর বর্ধমান ? ......( নয় ) এ শহর কি জতুগৃহ হবে? আমি যখন ‘বর্ধমান সমাচার’ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলাম তখন থেকেই মাথায় প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে। এই শহরের সারা অবয়ব জুড়ে “সুপার মার্কেট” তৈরি হতে শুরু করেছে উনিশশো নব্বইয়ের দশক থেকেই। সুপার মার্কেট বলতে যে ঝা চকচকে একটা ছবি মানসচক্ষে ভেসে ওঠে এগুলি তার অত্যন্ত ‘দরিদ্র আত্মীয়’ সংস্করণ । ভেতরে ঢুকে এক রাস্তা থেকে আর এক রাস্তায় ঢুকতে গেলে অবশ্যই ধাক্কা খাবেন উল্টোমুখে আসা অন্য কারো সাথে। নেই আরো কতকিছু। সব থেকে বড় কথা এইসব মার্কেটে আগুণ লাগলে দমকল ঢুকতে পারবে না। যদিবা কোন কৌশলে জলের পাইপ নিয়ে যাওয়া যায় জল কোথায়? আশেপাশের পুকুরগুলি ‘পুকুর চুরি’ হয়ে গেছে। এমন কি বাঁকার পাড়েও যদি বসতি এলাকায় আগুণ লাগে কোনদিন জল পাওয়া যাবে না। সারা শহরটা স্থান বিশেষে খান্ডব বন ও জতুগৃহের রূপ নিয়েছে। # অনেক কথা বলার চেস্টা করলাম। আরো অনেক বেশি কথা বলা হোল না। স্মৃতি নির্ভর লেখার এই এক মুস্কিল। লেখা প্রকাশিত হবার পর মনে হয়,’ আরে এই খানটায় এই তথ্য বাদ গেছে; এখানটা অন্যভাবে লেখা যেত ।‘ না, এখন ভেবে লাভ নেই। দুয়েকটা কথা ব্যক্তিগত কৈফিয়ত হিসাবে বলার...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ?...(আট)

কেমন আছে শহর বর্ধমান ? ...(আট) শহরের হৃদয়ের তত্বতালাশ দুদিক দিয়ে এই শহরের ‘হৃদয়ের’ খোঁজ নেওয়া যেতে পারে। যদি কেউ বাইরে থেকে অতিথি হিসাবে আসেন তাঁকে বলি রেল ইস্টিশান থেকে বেরিয়ে ডানদিক না গিয়ে বা সোজা না গিয়ে জিটি রোড বরাবর কলকাতার দিকে দক্ষিণ্মুখো হাঁটতে থাকুন। ঘোড়ার গাড়ি এখন রূপকথার বইএর পাতায় তাই একটা টোটো ধরুন। নেমে পড়ুুন বিজয় তোরণের সামনে। ইচ্ছে হলে কার্জন গেটও বলতে পারেন। হ্যাঁ , ঠিকই ধরেছেন ১৯০৫এ লর্ড কার্জন বর্ধমানে এসেছিলেন। তাঁর সম্মানেই এই তোরণ ইন্ডিয়া গেটের আদলে নির্মিত । এসে তো ছিলেন আরো অনেকে। নেতাজী সুভাষ , রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তারও আগে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি অবশ্য কলকাতা থেকে বজরায় এসেছিলেন। সদরঘাটে নেমেছিলেন। দামোদর তখন নাব্য ছিল। মহতাব চাঁদ তখন মহারাজ। রাজবাড়ির ভিতরে আদি ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিদ্যাসাগরের আসার কথা শোনা যায় । নানা আখ্যানে লেখাও আছে এ সংবাদ। পারকার রোডের একটি বাড়িতে তিনি উঠতেন বিশ্রাম নিয়ে স্বাস্থ উদ্ধারের জন্য। আশ্চর্য না? এই শহরে কেউ আসতেন স্বাস্থ উদ্ধারের জন্য? তাও বিদ্যাসাগরের মত ব্যক্তিত্ব? না, এঁদের স্মরণে কোনো তোরণ নির্ম...

কেমন আছে শহর বর্ধমান ......(সাত)

কেমন আছে শহর বর্ধমান ......(সাত) বাঁকার সাথে পায়ে পায়ে এবার আমরা একটু অন্যপথে ঘুরতে বেরোব শহরটা। আমাদের অভিমানিনী বাঁকার সঙ্গে একটু আন্তরিক চেনাজানা করা দরকার। চলুন শহরের পশ্চিম দিকে একবার ঘুরে আসি। একটা সময় ছিল যখন একমাত্র বাঁকাই এই শহরের পানীয় জলের যোগান দিত। বেলকাশ ও ফেরীঘাটের উত্তর সীমানা দিয়ে বাঁকা বয়ে এসে রথতলা সাইফনের কাছে আরো ডানদিকে বাঁক নিয়ে রথতলাকে দক্ষিণে রেখে শহরে ঢুকেছে। এখানে বাঁকা এখনো ছোটো নদী। রথতলা ঢোকার আগে আর একটু ডানদিকে বাঁকার একটা ধারা বয়ে গেছে। মনে হয় এটা মানুষের কীর্তি । এখানেই জলকল। আরো উত্তরে বীরুটিকরি গ্রাম। এইখানে জল শোধন করে পাম্পের সাহায্যে শহরে পাঠানো হোত পানীয় জল। মূল এলাকার নাম লাকুরডি। এখন এই লাকুরডি ও জলকল-বীরুটিকুরি গ্রামের মাঝ বরাবর দুর্গাপুর হাইওয়ে বা বাইপাস চলে গেছে। আমরা রথতলা ও মোহন্ত স্থলের কাছে বাঁকাকে ছেড়ে লাকুরডির পথ ধরে টিকরহাটে ঢুকবো। লাকুরডি অঞ্চলের পূর্ব সীমানায় একটা আদ্যিকালের পুরোনো গাছ ও তার নীচে একটা মন্দির আছে। ঠিক তার পূর্ব সীমানা দিয়ে একটা ছোটো কাঁদর ঝিরিঝিরি বয়ে চলেছে দক্ষিণে বাঁকার দিকে। গোদার পশিম পারের মাঠের অতিরিক্ত...